প্রকাশিত: Thu, Dec 14, 2023 6:36 PM আপডেট: Sat, Dec 6, 2025 2:21 PM
[১] বাগোয়ানে দুই বছর ধরে নিজ গৃহে শিকল বন্দি বৃদ্ধ মরিয়ম বেগম
শাহাদাত হোসেন, রাউজান
(চট্টগ্রাম): [২] রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের
পাঁচখাইন গ্রামে
প্রায় দুই
বছর ধরে
নিজ গৃহে
শিকল বন্দি
হয়ে মানবতার
জীবন যাপন
করছেন মরিয়ম
বেগম নামের
এক মানসিক
ভারসাম্যহীন বৃদ্ধ মহিলা।
[৩] এই বৃদ্ধ মাকে পায়ে শিকল বন্দি করে রাখা হয়েছে দুই বছর ধরে একটি নোংড়া কক্ষে। শিকল বন্দি এই মার একমাত্র পুত্র সন্তান মোহাম্মদ মামুন প্রবাসী। বাড়িতে থাকেন স্ত্রী পুত্র।
[৪] সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায় প্রবাসী মামুনের স্ত্রী সন্তান সাজানো গোছানো পাকাঘরে বসবাস করলেও মা ষাটোর্ধ মা মরিয়ম বেগমকে রাখা হয়েছে ভাঙ্গা সেঁতসেতেঁ একটি কুঁড়ের একটি নোংড়া কক্ষে। তাও পায়ে শিকল বেঁধে। মামুন ও তার স্ত্রী জেসমিন আকতারের দাবি মা মরিয়ম পাগল। মুক্ত অবস্থায় থাকলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় এ কারণে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে।
[৫] একজন বৃদ্ধ মা দুবছর ধরে শিকল বন্দি আছে এমন সংবাদ পেয়ে সংবাদ কর্মীরা ওই বাড়িতে গিয়ে মানুমের স্ত্রীকে অনুরোধ করা হয় বন্দি অবস্থায় থাকা তার শাশুড়ীকে দেখাতে।
[৬] এই অনুরোধের জবাবে প্রথমে মামুনের স্ত্রী সংবাদ কর্মীদের বলেন তার শাশুড়ী পাগল, দরজা খুলে সবাইকে মারধর করবে, বেরিয়ে এসে জিনিসপত্র ভাংচুর করবে। তার কথা শুনে তাকে অভয়দান করে দরজা খুলতে আবার অনুরোধ করা হলে তিনি ঘরের দরজা খুলেন। ভিতরে গিয়ে দেখা যায় ভাঙ্গা নোংড়া একটি কক্ষে শুয়ে আছেন এই বৃদ্ধ নারী। তার একটি পায়ে শিকল বাঁধা। বন্দি অবস্থায় থাকা এই নারী সংবাদ কর্মীদের দেখে শোয়া অবস্থা থেকে উঠে বসতে পড়নের কাপড়ছোপড় ঠিকঠাক করে নেন। সাথে পুত্রবধুকে দেখে বলেন মেহমানদের বসতে চেয়ার দেয়, বলেন নাস্তাপানি দিতে। কেমন আছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ করেন তাকে জোড় করে এখানে বেঁধে রাখা হয়েছে। এসব অভিযোগ করতে করতে তিনি শুরু করেন সাধু ভাষায় অসংলগ্ন কথাবার্তা। কিছুক্ষণ সেখানে অবস্থান করে ধারণা করা যায় এই নারী মানষিক রোগে আক্রান্ত।
[৭] শাশুড়ীকে ভাল করতে কোনো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে পুত্রবধু জেসমিন বলেন শহরে নিয়ে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ খাওয়ানো হচ্ছে। কোন চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে কি ঔষধ খাওয়ানো হচ্ছে সেই ব্যবস্থাপত্র দেখতে চাইলে তার এনে দেয়া ব্যবস্থাপত্রটি ডা.মহীউদ্দীন এ.শিকদারের। এই ব্যবস্থাপত্রটি দেয়া হয়েছিল ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসের ২০ তারিখের। তার সাথে কথা বলার ফাঁকে প্রবাস থেকে ভিডিও কলে কথা বলেন বৃদ্ধার পুত্র মামুন। তিনি দাবি করেন মানষিক রোগাক্রান্ত মাকে মুক্ত অবস্থায় রাখা হলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সে কারণে তাকে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বললে স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুল খালেক বলেন ওই পরিবারকে অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছে বৃদ্ধ এই মাকে সুন্দও পরিবেশে রেখে ভালো মতো চিকিৎসা করতে।